Header Ads

বিছানাকান্দি, সিলেট


বিছনাকান্দি সিলেট শহর থেকে বেশখানিক পথ দূরে। প্রকৃতির আপন লীলাখেলায় মেতে আছে অপার সৌন্দর্যের জলপাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি যা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত! বিছনাকান্দির এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পাথর আর পাথর। মনে হবে যেন একটি পাথরের বিছানা। এক অপূর্ব সৌন্দর্য, সারারাত না ঘুমিয়ে এই সৌন্দর্য দেখে নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানিতে পা ফেলে মনে হবে পৃথিবীর সব শান্তি এখানে। শুকনো মৌসুমে বিছনাকান্দির আসল সৌন্দর্য চোখে পড়ে না। বর্ষাকালে পানির ঢল জায়গাটিকে মায়াময় বানিয়ে তোলে। স্বচ্ছ শীতল পানির তলদেশে পাথরের পাশাপাশি নিজের শরীরের লোমও দেখা যাবে স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় জলপাথরের বিছানায় শুয়ে বসে ছবি তুলতে তুলতে আর গোসল করতে হয়তো সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলবেন। বিছনাকান্দি (Bisnakandi) এর সৌন্দর্য অসাধারণ। দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত শুধু পাথর আর পাহাড়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় আকাশ আর মেঘের সাথে পাহাড়ের দলগুলো মিশে আছে। যতোই কাছে যাই পাহাড়গুলোর ততোই আকাশ থেকে যেন দূরে যেতে থাকে। আর পাহাড়ের গায়ে বেপরোয়া সাদা মেঘের দলগুলো যেন আঠার মতো লেগে থাকে
বিছানাকান্দি, সিলেট-View Bangladesh

পাথর, পানি, পাহাড় আর মেঘ নিয়েই যেন বিছনাকান্দি। এখানে যাওয়ার পর যে কথাটি সর্বপ্রথম মনে হবে তা হল প্রশান্তি। এই প্রশান্তিটুকু নিমিষেই ভুলিয়ে দেয় প্রতিদিনকার শত গ্লানি। প্রকৃতির সৌন্দর্যের কাছে যেন হার মানতেই হয় নাগরীক সভ্যতাকে। আর এই চরম সত্যটুকু উপলব্ধি করতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে বিছনাকান্দিতে
বিছনাকান্দি-লক্ষনছড়াপান্থুমাইএই তিনটি জায়গা ঘুরিয়ে আনতে নৌকার খরচ পরবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রায় ১১০০-১৫০০ টাকা। লক্ষনছড়া মাঝি চিনে কিনা সেটা আগেই জিজ্ঞেস করে শিওর হয়ে নিবেন। তিনটি জায়গা মোটামোটি ভাবে ঘুরে হাদারপাড় ফিরে আসতে সময় লাগবে প্রায় ঘন্টা। তাই সিলেট থেকে আসার পথে গোয়াইনঘাট বাজারেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে অথবা প্যাক করে নিতে পারেন। গোয়াইন ঘাট থেকে আপনাকে যেতে হবে হাদারপাড়। গোয়াইন ঘাট বাজার থেকে সিএনজি নিয়ে সহজেই হাদারপাড় যাওয়া যাবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৪০ টাকা। কেউ যদি সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজি নিয়ে সরাসরি হাদারপার চলে আসেন, তাহলে হাদারপারের গনি মিয়ার ভূনা খিচুড়ি খেতে ভুলবেন না

কখন যাবেন

সিলেট নগরীর সৌন্দর্জ্যটা আসলে বর্ষাকালেই বেশী উপভোগ করা যায়। আর তা ছাড়া বর্ষার সময়ে বিছনাকান্দি (Bichnakandi) পূর্ণযৌবন ফিরে পায়

কিভাবে যাবেন

বাসে সিলেট
ঢাকা থেকে সিলেট এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে৷বাস গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পরপর ছেড়ে যায়৷ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শথেকে হাজার ১শটাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস, এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শথেকে সাড়ে ৪শটাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়

ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে হাজার ১৮ টাকা। ট্রেনে গেলে রাত .৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে জাওয়াটাই সব থেকে ভালো কারন আপনার যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে আর আপনি যদি রাতে ট্রেনে ঘুমিয়ে নিন তাহলে সকালে ট্রেন থেকে নেমেই আপনার ভ্রমন শুরু করতে পারেন আর সময় লাগবে - ঘন্টা

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট
চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে হাজার ১৯১ টাকা।ট্রেন এর টিকেট এর দাম: এসি বার্থ ৬৯৮ টাকা, এসি সিট ৪৬০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস বার্থ ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস সিট ২৭০ টাকা. স্নিগ্ধা ৪৬০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৮০ টাকা, শোভন ১৫০ টাকা, সুলভ ৯৫ টাকা

সিলেট বাই এয়ার / প্লেনে সিলেট
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন যায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা-সিলেট এর টিকেট মুল্যঃ
Super Saver: ৩২০০ টাকা
Economy Saver: ৩৭০০ টাকা
Economy Flexible: ৪২০০ টাকা
Business Saver: ৫৯০০ টাকা
Business Flexible: ৬৯০০ টাকা


সিলেট থেকে বিছনাকান্দি
বিছনাকান্দি যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা পয়েন্ট যেতে হবে। সেখানে বিমানবন্দর রোডের দিকে সিএনজি স্টেশন আছে। সিএনজি রিজার্ভ করে হাদারপার নামক জায়গা পর্যন্ত গেলে ভাল হয়। পাঁচজন মিলে ১০০০টাকায় সাধারণত ভাড়া নেওয়া হয়। তবে মানুষ কম থাকলে ৮০-২০০ টাকা জনপ্রতিও যাওয়া যায়। হাদারপার বাজারটি খুব একটা বড় না আবার ছোটও না। মোটামুটি সবকিছুই পাবেন। খাবার, পানি, কাপড় সবই কিনতে পাওয়া যায়। হাদারপার বাজারেই বিছনাকান্দি-পান্থুমাই - লক্ষনছড়া যাওয়ার নৌকা পাওয়া যায়। সুন্দর বেশভুষা দেখে মাঝিরা ২০০০টাকা চেয়ে বসতে পারে। ভুলেও রাজি হবেন না। নৌকা ভাড়া আসা-যাওয়া সর্বোচ্চ ১১০০-১৫০০ টাকা হলে ভাল। দরাদরি করে এর চেয়ে কমে পেলে ভাল তবে অবশ্যই এর বেশি দামে যাবেন না। শুকনো মৌসুমে হেঁটে যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৩০-৪০ মিনিট। বর্ষাকালে নৌকায় যাওয়াই উত্তম। এক নৌকায় বিছনাকান্দি, পান্থুমাই লক্ষনছড়া ঘুরে দেখাবে বলে নিবেন

কোথায় থাকবেন

যেতে আসতে সময় না লাগার কারনে আপনাকে আর থাকার চিন্তা করতে হবে না। সিলেটে থাকার মত অনেকগুলো হোটেল আছে, আপনি আপনার প্রয়োজন সামর্থ অনুযায়ী যে কোন ধরনের হোটেল পাবেন। কয়েকটি পরিচিত হোটেল হলহোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা,কায়কোবাদ ইত্যাদি। লালা বাজার এলাকায় কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷ হোটেল অনুরাগ সিঙ্গেল রুম ৪০০টাকা (দুই জন আরামসে থাকতে পারবেন), তিন বেডের রুম ৫০০টাকা(নরমালই ৪জন থাকতে পারবেন) রাত যাপনের জন্য দরগা রোডে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম ভাড়া ৫০০/- টাকা থেকে ৫০০০/- টাকা পর্যন্ত

শহরের শাহজালাল উপশহরে হোটেল রোজ ভিউ (০৮২১-৭২১৪৩৯)
দরগা গেইটে হোটেল স্টার প্যাসিফিক (০৮২১-৭২৭৯৪৫)
ভিআইপি রোডে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৬০৭৭)
বন্দরবাজারে হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল (০৮২১-৭২১১৪৩)
নাইওরপুলে হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০)
জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫)
লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭)
আম্বরখানায় হোটেল পলাশ (০৮২১-৭১৮৩০৯)
দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬)
হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩)
জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০)
তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি

তামাবিল/জৈন্তাপুর এর দিকে বেশ কিছু রিসোর্ট আছে। আপনার থাকার ব্যবস্থা যদি এইদিকে কোথাও হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে হাদারপাড় থেকে আবার আগের মতই গোয়াইনঘাটে আসতে হবে। গোয়াইন ঘাট থেকে যেতে হবে সারি ঘাট। সিএনজি/লেগুনাতে করে যেতে পারেন। ভাড়া জনপ্রতি ৬০টাকা

কোথায় খাবেন

খাওয়ার জন্য সিলেটের জিন্দাবাজারে বেশ ভালো তিনটি খাওয়ার হোটেল আছে। হোটেল গুলো হচ্ছে পাঁচ ভাই,পানশি পালকি এগুলোতে প্রায় ২৯ প্রকারের ভর্তা আছে

আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক- View Bangladesh

No comments

Powered by Blogger.