Header Ads

আহসান মঞ্জিল, ঢাকা


আহসান মঞ্জিল  বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কুমারটুলি এলাকায় ঢাকার নওয়াবদের আবাসিক প্রাসাদ জমিদারির সদর কাচারি বর্তমানে জাদুঘর কথিত আছে, মুগল আমলে এখানে জামালপুর পরগনার জমিদার শেখ এনায়েতউল্লাহর রঙমহল ছিল পরে তাঁর পুত্র মতিউল্লাহর নিকট থেকে রঙমহলটি ফরাসিরা ক্রয় করে এখানে একটি বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে
আহসান মঞ্জিল, ঢাকা view bangladesh

১৮৩০ সালে খাজা আলীমুল্লাহ ফরাসিদের নিকট থেকে কুঠিবাড়িটি কিনে নেন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে এটি নিজের বাসভবনে পরিণত করেন। বাসভবনকে কেন্দ্র করে খাজা আব্দুল গনি মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি নামক একটি ইউরোপীয় নির্মাণ প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করান যার প্রধান ইমারত ছিল আহসান মঞ্জিল। ১৮৫৯ সালে আহসান মঞ্জিলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৮৭২ সালে সমাপ্ত হয়। আবদুল গনি তাঁর পুত্র খাজা আহসানুল্লাহ নামানুসারে ভবন এর নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল। ওই যুগে নবনির্মিত প্রাসাদ ভবনটি রঙমহল এবং পূর্বেকার ভবনটি অন্দরমহল নামে পরিচিত ছিল। ১৮৮৮ সালে এপ্রিলে প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে আহসান মঞ্জিলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়, বিশেষ করে অন্দরমহলটি একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। নওয়াব আহসানুল্লাহ অন্দরমহলটি পুনর্নির্মাণ এবং রঙমহলটি মেরামত করান। মেরামত কাজের জন্য রানীগঞ্জ থেকে উন্নত মানের ইট আনা হয়। মেরামত কর্ম পরিচালনা করেন প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র রায়। রঙমহলটির উপর বর্তমানে যে সুদৃশ্য গম্বুজ রয়েছে তা সময় সংযোজন করা হয়। ১৮৯৭ সালের ১২ জুনের ভূমিকম্পে আবার আহসান মঞ্জিলের প্রভূত ক্ষতি হয়। তবে পরে নওয়াব আহসানুল্লাহ তা সংস্কার করিয়ে নিয়েছিলেন এখন এটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক পরিচালিত একটি জাদুঘর
এখানে এখন তুমুল দর্শনার্থীদের ভিড়। মুঘল আমলের কৃতি গুলো খুব কাছ থেকে দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন প্রাচীন এই প্রাসাদ থেকে। প্রসাদের ঠিক দক্ষিণদিকে রয়েছে বুড়িগঙ্গা নদী। গেট দিয়ে প্রবেশ করে রাস্তার পার্শ্বে দেখবেন ফুলের বাগান। লাল-নীল-বেগুনি রঙের ফুলের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হবেন। মঞ্জিলের সামনে বিশাল সবুজ মাঠ। মঞ্জিল থেকে বড় একটা সিড়ি নেমে এসেছে মাঝে
প্রকৃতি ছেড়ে এবার প্রাসাদের দিকে যাওয়া যাক। অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে তখনকার জামালপুর পরগনার (বর্তমান ফরিদপুর-বরিশাল) জমিদার শেখ ইনায়েতউল্লাহ রংমহল প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর জমিদারের ছেলে শেখ মতিউল্লাহ এটি ফরাসি বণিকদের কাছে বিক্রি করেন। ১৮৩৫ সালের দিকে বেগমবাজারে বসবাসকারী নবাব আবদুল গনির বাবা খাজা আলীমুল্লাহ এটা কিনে নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৮৭২ সালে নবাব আবদুল গনি নতুন করে নির্মাণ করে তার ছেলে খাজা আহসানউল্লাহর নামে ভবনের নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল (Ahsan Manzil)
এটি একটি দোতলা ভবন। বারান্দা মেঝে মার্বেল পাথরে তৈরি। প্রতিটি কক্ষের আকৃতি অষ্টকোণ। প্রাসাদের ভেতরটা দুভাগে বিভক্ত। পূর্বদিকে বড় খাবার ঘর। উত্তরদিকে লাইব্রেরি। পশ্চিমে জলসাঘর। পুরো ভবনের ছাদ কাঠের তৈরি। নিচতলায় খেলার ঘরে রয়েছে বিলিয়ার্ড খেলার জন্য আলাদা জায়গা। দরবার হলটি সাদা, সবুজ হলুদ পাথরের তৈরি। দোতলায় বৈঠকখানা, গ্রন্থাগার আর তিনটি মেহমান কক্ষ। পশ্চিম দিকে আছে নাচঘর আর কয়েকটি আবাসিক কক্ষ
আহসান মঞ্জিল ঢাকার প্রথম ইট-পাথরের তৈরি স্থাপত্য। যেখানে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা হয় নবাবদের হাতে। মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী পশ্চিমাদের সবসময়ই আকৃষ্ট করত। লর্ড কার্জন ঢাকায় এলে এখানেই থাকতেন। বাংলাদেশ সরকার আহসান মনঞ্জিলকে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণ করে। ১৯৯২ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়
আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে এখন পর্যন্ত সংগৃহীত নিদর্শন সংখ্যা হাজার ৭৭। এই রংমহলের ৩১টি কক্ষের মধ্যে ২৩টিতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে

টিকেট মূল্য

প্রবেশ মূল্যঃ প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশী দর্শক = ২০ টাকা জনপ্রতি, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশী শিশু দর্শক (১২ বছরের নিচে) = টাকা জনপ্রতি,  অন্যান্য বিদেশী দর্শক = ৭৫ টাকা জনপ্রতি, এছাড়া প্রতিবন্ধী দর্শকদের জন্য কোন টিকিটের প্রয়োজন হয় না পূর্ব থেকে আবেদনের ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে জাদুঘর দেখতে দেয়া হয়

আহসান মঞ্জিল খোলার সময়সূচী

অক্টোবর থেকে মার্চ
সাপ্তাহিক বন্ধ
বৃহস্পতিবার
শুক্রবার
বিকাল .০০ টা থেকে সন্ধ্যা .০০ টা পর্যন্ত
শনিবারবুধবার
সকাল .০০ টা থেকে বিকেল .৩০ টা পর্যন্ত
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর
সাপ্তাহিক বন্ধ
বৃহস্পতিবার
শুক্রবার
বিকাল .০০ টা থেকে সন্ধ্যা .০০ টা পর্যন্ত
শনিবারবুধবার
সকাল ১০.০০ থেকে বিকাল .০০ টা পর্যন্ত
ফোন: ৭৩৯১১২২, ৭৩৯৩৮৬৬
সরকারি ছুটির দিন বন্ধ থাকে

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাকার যে কোনো স্থান থেকে গুলিস্তান এসে নর্থ সাউথ রোড ধরে কিছুদূর গেলেই পড়বে নয়াবাজার মোড়। এখান থেকে বাবুবাজার দিকে যেতে থাকবেন। বাবুবাজার ব্রিজের বামপাশে নিচ দিয়ে গেলে পড়বে আরেকটি মোড়। এর বামপাশে গেলেই ইসলামপুর। এখানে এসে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে আহসান মঞ্জিল যাওয়ার রাস্তা
অথবা আপনাকে প্রথমে পুরান ঢাকার সদরঘাট যেতে হবে। সেখান থেকে হেঁটে অথবা রিকশায় করে আপনি চলে যেতে পারবেন আহসান মঞ্জিল

আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক- View Bangladesh

No comments

Powered by Blogger.