তিস্তা ব্যারেজ, লালমনিরহাট
বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্পের তিস্তা
ব্যারেজ লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলাধীন
গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী এবং পার্শ্ববর্তী নীলফামারী
জেলার ডিমলা উপজেলাধীন খালিসা
চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়া- এর মধ্যবর্তী স্থানে
তিস্তা নদীর উপর নির্মিত।
ডালিয়া নামটি ফুলের মতো হলেও
এটি একটি গ্রাম, যা
দেখতে কোনো মনোহরিণীর মতো।
সবুজে আচ্ছাদিত এ গ্রামটি আকর্ষণ
করে সবচেয়ে পথচারীদের। ভারতের উত্তর সিকিমের
পার্বত্য এলাকায় তিস্তার উৎপত্তি। বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নীলফামারী
জেলা দিয়ে। এ নদী
বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সব
কয়টি জেলা অর্থাৎ নীলফামারী,
লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও
গাইবান্ধার ওপর দিয়ে প্রবহমান।
আশির দশকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা
উপজেলার দোয়ানীতে তিস্তা নদীর ওপর
গড়ে তোলা হয় বাঁধ।
যাকে বলা হয় তিস্তা
ব্যারাজ প্রকল্প। এ ব্যারেজটি তৈরির
ফলে নীলফামারি, রংপুর ও দিনাজপুর
জেলার বিশাল এলাকা সেচ
সুবিধার আওতায় এসেছে।
তিস্তা ব্যারেজ, লালমনিরহাট view Bangladesh |
নদীর মাঝখানে ব্যারাজ। যান্ত্রিক গেট। টানা ৪৪টি
গেট একনাগাড়ে। এর আরেক পাশে
আছে আরও আটটি গেট।
খালে পানি নেওয়ার জন্য।
অনেকগুলোই খোলা। তিস্তা নদীর
পানিকে নিয়ন্ত্রণ করে, পানি সংরক্ষণ
করে শুষ্ক মৌসুমে উত্তরবঙ্গের
কয়েকটি জেলায় সেচের কাজে
লাগানো হয় এই ব্যারাজ
দিয়ে। লোহা-লক্কড়, কংক্রিটের
বিশাল বিশাল সব কাঠামো।
নদীর দুপাশে গড়ে তোলা
হয়েছে সবুজ বেষ্টনী।
তিস্তা ব্যারেজকে (Teesta
Barrage) ঘিরে
তিস্তার পাড় সেজে উঠেছে
অপরূপ সাজে। সংলগ্ন এলাকায়
রয়েছে বেশ কয়টি পিকনিক
স্পট। দূর-দূরান্ত থেকে
মানুষ দলবেঁধে এখানে এসে পিকনিক
করে। বর্ষাকালে তিস্তা যথেষ্টই ভরা
ও খরস্রোত থাকে। খালটাও
দেখার মতো। বিকেলে অনেকেই
আসে বেড়াতে। ব্যারেজের পাশে পিচ ঢালা
কালো রাস্তা দু’পাশ
কাশফুলে ঢাকা। অপুরূপ সে
দৃশ্য। পিচঢালা সরু পথ ধরে
চলতে চলতে মনে হবে
এই পথ যেন শেষ
না হয়। সবকিছু মিলিয়ে
এটি দেখার মত একটি
জায়গা।
নির্মাণ ইতিহাস
উত্তরাঞ্চল খরাপিড়িত এলাকা হওয়ায় তৎকালিন
বৃটিশ আমলে ১৯৩৭ সালে
তিস্তা ব্যারেজ নিমার্ণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।তবে
এর মুল পরিকল্পনা গ্রহণ
করা হয় ১৯৫৩ সালে
পাকিস্তান আমলে। ১৯৫৭
সালে নির্মাণ কাজ শুরুর পরিকল্পনা
থাকলে রাজনৈতিক অস্থিতিলতার কারণে তা সম্ভব
হয়নি। পরবর্তীতে
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৯
সালে ব্যারেজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়
এবং ১৯৮৫ সালে সৌদি
উন্নয়ন তহবিল ও ইসলামিক
ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং আবুধাবি
উন্নয়ন তহবিলের প্রায় ২,৫০০কোটি
টাকা ব্যয়ে তিস্তা ব্যারেজসহ
সেচ যোগ্য কৃষিজমি ও
জলকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়।
১৯৯০ সালে এর নির্মাণ
কাজ শেষ হয় এবং
একই বছর ৫ আগস্ট
এর কার্যক্রম চালু হয়।
এর মোট নির্মাণ ব্যয়ছিল
১৫শ কোটি টাকা এবং
৫ লক্ষ ৪০ হাজার
হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা
প্রদান করে। ২০১৬
সালে ২৬৬ হেক্টর জমি
অধিগ্রহণ করা হয়।
কিভাবে
যাবেন
রংপুর
শহর
থেকে
৭৫
কিলোমিটার দূরের
এই
প্রকল্পে যেতে
সময়
লাগে
দেড়
ঘণ্টা।
নীলফামারীর ডালিয়ার গাড়িতে চড়ে
যাওয়া
যায়,
জনপ্রতি ভাড়া
৬০
থেকে
৭০
টাকা।
লালমনিরহাট সদর
হতে
অথবা
হাতীবান্ধা উপজেলা
সদর
হতে
সড়কপথে তিস্তা
ব্যারেজ এ
যাওয়া
যায়।
হাতীবান্ধা উপজেলা
সদর
হতে
সড়কপথে এর
দুরত্ব
২০
কিমি।
যারা
ঢাকা
কিংবা
অন্য
শহর
থেকে
যাবেন
তারা
সরাসরি
যেতে
পারেন
নীলফামারী। সেখানে
স্কুটার, রিক্সা
কিংবা
মোটরসাইকেলে করে
যেতে
পারেন
তিস্তাপারে।
কোথায় থাকবেন
ব্যারেজের পাশেই
মনোরম
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে
অবসর
রেস্ট
হাউজ
অবস্থিত। পানি
উন্নয়ন বোর্ড
অবসর
রেস্ট
হাউজের
তত্ত্বাবধান করে
থাকে।
তাদের
অনুমতি
নিয়ে
এ
রেস্ট
হাউজে
অবস্থান করা
যায়।
তবে
এটি
সকলের
জন্য
উন্মুক্ত নয়।
✺ আপনার যাত্রা
শুভ আর নিরাপদ হোক-
✺ View Bangladesh
No comments