লাল শাপলার রাজ্য “সাতলা” বরিশাল
বিশাল বিলজুড়ে ফোটে লাল শাপলা। চারপাশে
গাঢ় সবুজের পটভূমিতে এ
যেন এক লাল স্বর্গ।
জেলা সদর থেকে প্রায়
৬০ কিলোমিটার দূরের এক বিলে
দেখা মিলবে চোখজুড়ানো এমন
দৃশ্যের। প্রকৃতির বুকে আঁকা এ
যেন এক নকশি কাঁথা। অপরুপ এ সৌন্দর্য
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের এক
বিলের, স্থানীয়দের কাছে যেটি পরিচিত
শাপলার বিল নামে।
শাপলা ফুলের রাজ্য সাতলা, বরিশাল View Bangladesh |
লাল আর সবুজের মাখামাখি
দূর থেকেই চোখে পড়বে।
কাছে গেলে ধীরে ধীরে
সবুজের পটভূমিতে লালের অস্তিত্ব আরো
গাঢ় হয়ে ধরা দেবে।
চোখ জুড়িয়ে দেবে জাতীয়
ফুল শাপলার বাহারি সৌন্দর্য।
আগাছা আর লতাগুল্মে ভরা
বিলের পানিতে ফুটে আছে
হাজার হাজার লাল শাপলা।এ
যেন এক শাপলার রাজ্য।
সূর্যের সোনালি আভা শাপলাপাতার
ফাঁকে ফাঁকে পানিতে প্রতিফলিত
হয়ে কয়েক গুণ বাড়িয়ে
দিয়েছে বিলের সৌন্দর্য। নৌকা
কিংবা হাঁটুপানি মাড়িয়ে বিলের ভেতর
ঢুকলে মনে হবে বাতাসের
তালে তালে এপাশ-ওপাশ
দুলতে দুলতে হাসিমুখে অভ্যর্থনা
জানাচ্ছে শাপলারা। সে হাসিতে বিলজুড়ে
ছড়িয়ে পড়ছে আনন্দধারা।
এ
বিলে
ঠিক
কবে
থেকে,
শাপলা
জন্মাতে শুরু
করেছে
তা
নিয়ে
নেই
সঠিক
কোন
তথ্য।
তবে,
স্থানীয় বয়স্কদের কাছ
থেকে
জানা
যায়
জন্মের
পর
থেকেই,
এভাবে
শাপলা
ফুটতে
দেখেছেন তারা। এ বিলে, তিন
ধরণের
শাপলা
জন্মে।
লাল,
সাদা
আর
বেগুনি। তবে,
লাল
শাপলাই
বেশি। গোটা গ্রাম জুড়ে
শাপলার
চাষ
হয়
এখানে।
উত্তর
সাতলা
(Satla) নামে
এ
গ্রামটির প্রায়
১০
হাজার
একর
জলাভুমিতে শাপলা
(Waterlilly) এর
চাষ
করা
হয়।
গ্রামের অধিবাসীদের ৭০%
ই
শাপলা
চাষ
এবং
বিপণন
এর
সাথে
জড়িত।
এ
গ্রাম
থেকে
দেশের
বিভিন্ন স্থানে
শাপলা
সরবরাহ
করা
হয়।
ছবি
তোলার জন্য আদর্শ একটি
গ্রাম
সাতলা।
কখন যাবেন
শাপলা
হয়
প্রায়
৯
মাস।
মার্চ থেকে শুরু করে নভেম্বর পর্যন্ত শাপলার পুরো সিজন এখানে। তাই
এ
সময়ের
মধ্যে
গেলে
শাপলা
দেখতে
পাবেন। শাপলা দেখতে হলে
আপনাকে
খুব
সকালে
যেতে
হবে,
কেননা
সকাল
৮টার
পরে
ফুল
বুজে
ছোট
হয়
যায়
অথবা
শাপলা
শিকারিরা শাপলা
তুলে
নিয়ে
বাজারে
বিক্রি
করতে
যায়।
তাই
সবচেয়ে
ভালো
হয়
রাতে
গ্রামে
থাকতে
পারলে।
সাতলা কিভাবে যাবেন
বাসে বা
সড়ক পথে বরিশাল
সড়কপথে ঢাকা থেকে বরিশাল
আপনি ৬ থেকে ৮
ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন। প্রতিদিন
ভোর ৬ টা থেকে
রাত ১০ টা পর্যন্ত
গাবতলি বাস টার্মিনাল থেকে
বেশকিছু বাস বরিশালের উদ্দেশে
ছেড়ে যায়। বেশীরভাগ বাস
পাটুরিয়া ঘাট অতিক্রম করে
বরিশালে যায় আবার কিছু
কিছু বাস মাওয়া ঘাট
অতিক্রম করে বরিশালে যায়।
ঢাকা থেকে আগত বাসগুলো
বরিশাল (Barisal)
এর নতুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে থেমে
থাকে।
ঢাকা থেকে বরিশালে চলাচলকারী
বাসগুলোর মধ্যে আছেঃ
শাকুরা পরিবহন, ফোনঃ ০১১৯০৬৫৮৭৭২, ০১৭২৯৫৫৬৬৭৭
ঈগল পরিবহন, ফোনঃ ০২-৯০০৬৭০০
হানিফ পরিবহন, ফোনঃ ০১৭১৩০৪৯৫৫৯
বাস ভাড়া
এসি বাসের ভাড়াঃ ৭০০/-
টাকা
নন এসি বাসের ভাড়াঃ
৫০০/- টাকা
লোকাল বাসের ভাড়াঃ ২৫০
টাকা থেকে ৩০০/- টাকা।
নৌপথে
বা
লঞ্চে
বরিশাল
ঢাকা থেকে বরিশাল এর লঞ্চগুলো
রাত ৮টা থেকে ৯টার
মধ্যে সদর ঘাট থেকে
ছাড়ে। এর মধ্যে সুন্দর
বন ৭/৮, সুরভী৮,
পারাবত ১১, কীর্তনখোলা ১/২ লঞ্চ গুলো
ভাল। লঞ্চ গুলো বরিশাল
পৌঁছায় ভোর ৫টার দিকে।
লঞ্চ ভাড়া
ডেক ভাড়া ১৫০ টাকা,
ডাবল কেবিন ১৬০০, ভিআইপি
৪৫০০।
বরিশাল
থেকে
সাতলা
উত্তর সাতলা নানাভাবে যাওয়া
যায়। লঞ্চে বরিশাল গিয়ে
সেখান থেকে বাসে শিকারপুর।
এরপর অটোতে উত্তর সাতলা।
ঢাকা থেকে বাসে গেলে
উজিরপুরের নুতনহাট নেমে সেখান থেকে
অটোতে যেতে পারে। অথবা
বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাতলা-বাগধা
গ্রামে সরাসরী বাস সার্ভিস
আছে। প্রায় ২ ঘন্টার
মতন লাগে। এছাড়া মহেন্দ্র
গাড়িতে করেও আপনি যেতে
পারবেন।
কোথায় থাকবেন
সাতলাতে থাকতে হলে থাকতে
হবে স্কুল ঘরে বা
কোন গৃহস্তের বাড়িতে। অতিথিপরায়ন মানুষেরা তাতে খুশিই হবে।
এছাড়া আপনি চাইলে বরিশাল
ফিরে আসতে পারেন। বরিশালে
থাকার জন্য বেশকিছু আবাসিক
হোটেল রয়েছে।
- হোটেল প্যারাডাইজ
টু ইন্টারন্যাশনাল, ফোনঃ +৮৮-০১৭১৭০৭২৬৮৬, +৮৮-০১৭২৪৮৫৩৫৯০
- হোটেল গ্র্যান্ড
প্লাজা, ফোনঃ +৮৮-০১৭১১৩৫৭৩১৮, +৮৮-০১৯১৭৪৫৮০৮৮
- হোটেল এথেনা ইন্টারন্যাশনাল,
ফোনঃ +৮৮-০৪৩১-৬৫১০৯, +৮৮-০৪৩১-৬৫২৩৩
- হোটেল হক ইন্টারন্যাশনাল,
ফোনঃ +৮৮-০১৭১৮৫৮৭৬৯৮
✺ আপনার যাত্রা
শুভ আর নিরাপদ হোক-
✺ View Bangladesh
No comments