ছেড়া দ্বীপ, কক্সবাজার
বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহৎ বদ্বীপ। এই
বদ্বীপের সর্ব দক্ষিণের স্থান ও দ্বীপের
নাম হলো ছেড়া দ্বীপ।
দক্ষিণ দিকে এর পরে বাংলাদেশের
আর কোনো ভূখণ্ড নেই। সেন্টমার্টিন
দ্বীপ (Saint
Martin’s Island) থেকে
৫ কি: মিটার দক্ষিণে
এ দ্বীপটির অবস্থান। ছেড়া দ্বীপের আয়তন
তিন কিলোমিটার। ২০০০ সালের শেষের
দিকে ছেড়া দ্বীপটির সন্ধান পাওয়া যায়।
ছেড়া দ্বীপ, কক্সবাজার View Bangladesh |
সেন্ট মার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন ১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে, যেগুলোকে স্থানীয়ভাবে 'ছেড়াদিয়া' বা 'সিরাদিয়া' বলা হয়ে থাকে। ছেড়া অর্থ বিচ্ছিন্ন বা আলাদা, আর মূল দ্বীপ-ভূখণ্ড থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন বলেই এ দ্বীপপুঞ্জের নাম ছেড়া দ্বীপ। দক্ষিণের এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক পাথর।
ছেড়া দ্বীপের অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য
দেখুন। সামুদ্রিক
ঢেউ আর সারিসারি নারিকেল
গাছ। নানা
প্রজাতির সামুদ্রিক পাখির আবাসস্থলও ছেঁড়াদ্বীপ।
গবেষকরা এখানে ১৮২ প্রজাতির
জীব বৈচিত্রের সন্ধান পেয়েছেন যার
মধ্যে রয়েছে ৪ প্রজাতির
উভচর, ১৩০ প্রজাতির পাখি,
২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী সামুদ্রিক জীবের উপস্থিতি আছে
অনিন্দ্য সুন্দর এই দ্বীপে।
প্রায় ৩৩,২৩৮ বছরের
পুরান একটি প্রবালের ফসিল
যেটি এই দ্বীপেই পাওয়া
গিয়েছে। দ্বীপের উত্তর অংশে অবস্থিত
জলাধারটি দেখুন। জোয়ারের সময়
এই জলাধারটি পশ্চিম উপকুলে একটি
সরু চ্যানেলের মাধ্যমে সাগরের সাথে যুক্ত
হয়।
শীতকালে এই দ্বীপে প্রচুর
অতিথি পাখি এসে থাকে।
এতে করে দ্বীপের পারিপার্শ্বিক
এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বহুগুন বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া চাঁদনী রাতে ছেড়া
দ্বীপ সাজে তার অপরুপ
সাজে।
ছেড়া দ্বীপে দেখা যাবে
অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। সামুদ্রিক ঢেউ
আর সারিসারি নারিকেল গাছ। প্রবাল পাথর
ও পাথরের তৈরী বিভ্ন্নি
কারুকার্য চোখে পড়বে ছেড়া
দ্বীপে গেলে। চাঁদনী রাতে
ছেড়া দ্বীপ সাজে তার
অপরুপ সাজে। চাঁদনী রাতে
যে কোন ভ্রমণকারীর মনভরে
যাবে ছেড়া দ্বীপের অপরুপ
শোভা অবলোকন করে। ছেড়া
দ্বীপের একদম উপরের দিকটাতে
ভরা পূর্ণিমাতে ক্যাম্পিং করে থাকার মজাই
আলাদা।
ছেড়া দ্বীপ যাবার উপায়
ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার (Cox'sbazar) থেকে বাসে করে
টেকনাফ যাওয়া যাবে। ঢাকার
ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদে টেকনাফের
বাস পাওয়া যায়। ঈগল,
মডার্ন লাইন, এস আলম,
শ্যামলী, গ্রীন লাইন ইত্যাদি
বাস টেকনাফ যায়। ১০-১৩ ঘণ্টা লাগে
পৌঁছাতে। চট্টগ্রাম ও কক্স-বাজার
থেকে নিয়মিত বাস পাওয়া
যায় টেকনাফ এর উদ্দেশে।
কক্স-বাজার থেকে মাইক্রো
বাস ভাড়া করেও টেকনাফ
যাওয়া যায়।
টেকনাফের জাহাজ ঘাটে গিয়ে
আপনাকে সী ট্রাকের টিকেট
কাটতে হবে। ভাড়া ৪৫০-৫৫০ টাকা (ফেরতসহ)। টেকনাফ
হতে সেন্টমার্টিনের দুরত্ব ৯ কিমি।
উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে
যেতে হয় এখানে। শীত
মৌসুমে সাগর শান্ত থাকে
তাই এই সময় এখানে
যাওয়া অনেক বেশি নিরাপদ।
এই পর্যটন মৌসুমে এখানে
টেকনাফ হতে সেন্ট মার্টিন
পর্যন্ত গ্রীন লাইনের ওয়াটার
বাস, কেয়ারী সিন্দবাদ সহ
বেশ কয়েকটি সী-ট্রাক
চলাচল করে। সকাল ১০
টায় এই নৌযানটি সেন্ট
মার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং
বিকাল ৩ টায় ফিরে
আসে। নভেম্বর থেকে মার্চ পযন্ত মাত্র ৪ মাস জাহাজ চলে। অন্য সময় যেতে হলে ট্রলারে করে যেতে হবে।
এছাড়াও ট্রলার ও স্পীড
বোটে করে যাওয়া যায়
সেন্ট মার্টিন’স। সী ট্রাক
গুলো এপ্রিল মাস পর্যন্ত
চলাচল করে। এর পর
বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রশাসন একে
চলতে দেয় না। তবে
যারা বৈরি মৌসুমে এডভেঞ্চার
হিসেবে যেতে চান সেন্টমার্টিন
তারা ট্রলার ভাড়া করে
যেতে পারেন। তবে এই
যাত্রাটি খুব একটা নিরাপদ
নয়। সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে না, তবে
ঘটে যেতে পারে। তাই
সাবধান। কিন্তু উত্তাল সাগরের
প্রকৃত রূপ দেখা কিংবা
নির্জন দ্বীপে বসে বৃষ্টিস্নান
করার লোভ যারা সামলাতে
না পারেন তাদের জন্য
ট্রলার ছাড়া বিকল্প কোনো
ব্যবস্থা নেই, ৮০০ টাকায়
ট্রলার ভাড়া করা যাবে
অথবা প্রতি জন ১০০
টাকা করে ভাড়া দিয়েও
যাওয়া যাবে।
সেন্টমার্টিন থেকে স্পীডবোটে করে
কিংবা ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে
করে ছেড়া দ্বীপ (Chera Dwip) যেতে হয়। সেন্ট
মার্টিনের জেটি থেকে ছাড়ে
এগুলো। আপনি চাইলে শুধু
ছেড়া দ্বীপ ঘুরে আসতে
পারেন অথবা স্পীডবোটে করে
ছেড়া দ্বীপ সহ আশে
পাশের সকল দ্বীপ ঘুরে
আসতে পারেন একদিনে।
কোথায় থাকবেন
ছেড়া দ্বীপে আসলে থাকার
কোন উপায় নেই, জোয়ারে
বেশির ভাগ জায়গাই ডুবে
যাওয়ার কারনে ওখানে থাকার
অবস্থা নেই। তাই
আপনাকে সেন্ট মার্টিনে ফেরত
আসতে হবে। সেন্টমার্টিনের বেশ
কিছু হোটেল ও রিসোর্টের
নাম ও টেলিফোন নম্বর
নীচে দেওয়া হলোঃ
১। ব্লু মেরিনঃ ০১৮১৯০৬৩৪১৮,
০১৭২২৪৭৩৬১৩, ০১৮১৯০৬৩৪২৫, ০২৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১,৯৩৫৯২৩০ (ঢাকা থেকে বুকিং
দিতে হবে)
২। কোরাল ব্লু রিসোর্টঃ
০১৭১৩১৯০০১৩, ০১৭১৩১৯০০০৭
৩। প্রাসাদ প্যারাডাইসঃ ০১৭১৩০৬২৫৬৯
৪। প্যাসিফিক রিসর্টঃ ০১৭৩২৪৩৪২৬৪ (সেন্টমার্টিন), ০১৭১২৬৪৩৬৯৪, ০১৭২০৯৩৯০৯০ (ঢাকা)
৫। হোটেল স্বপ্ন প্রবাল
: ০১৮১৪২৭৪৪০৯, ০১৭২২৫৪৫৮৭২ (সেন্টমার্টিন) ০২৮৬১১৪২৮, ০১৭১১-১১০৯১৯ (ঢাকা)
৬। সমুদ্র বিলাস (হুমায়ুন
আহমেদের): ০১৮১৩০১৯৮৩৯
৭। সীমানা পেরিয়ে : ০১৮১৯০১৮০২৭,
০১৮১৭০৪২০২০ (সেন্টমার্টিন ), ০১৮১৯৪৬৬০৫৯, ০১৮১৯৪৭৮৪৩৪, ০১৯১১১২১২৯২, ০১৭১১৩৪৪৪৫১ ( ঢাকা)
৮। নীল দিগন্তে রিসর্ট:
০১৭৩০০৫১০০৪ (সেন্টমার্টিন), ৮৬৫২৩৭৪, ০১৭৩০০৫১০০৫ (ঢাকা)
কোথায় খাবেন
ছেড়া দ্বীপে খাওয়ার মত
উল্লেখযোগ্য কিছু নেই ডাব
ও তরমুজ ছাড়া। ছোট
২-৪ টি চায়ের
দোকান অবশ্য আছে। ভারী
খাবার আপনাকে সেন্ট মার্টিন
থেকে নিয়ে আসতে হবে
অথবা সেন্ট মার্টিন ফিরে
খেতে হবে।
✺ আপনার যাত্রা শুভ আর নিরাপদ হোক- ✺ View Bangladesh
No comments